
প্রথম যেদিন করবীকে সমস্ত জামাকাপড় খুলে জি টি রোডের সুনসান রাস্তায় মাঝরাতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে হয়েছিল, ওর রাগ হয়নি, লজ্জাও না। এমন কতোবার ওকে ছেলের জন্য নিজের লজ্জা ছাড়তে হয়েছে! ওর খালি খুব ভয় করছিল, কোনো ট্রাক বা গাড়ি যদি না দাঁড়িয়ে, ওকে পিষে দিয়ে চলে যায়…পরে দেখলো, যায়না ।
আশেপাশে দল তৈরিই থাকে, গাড়ি বা ট্রাক দাঁড়ানো মাত্র চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলে আর করবীর কাজও তখন শেষ। কাপড় জড়িয়ে দেওয়ারও একজন মাসি থাকে, চোখের পলকে করবী অন্য গাড়িতে উধাও। তারপর দল কাজ সেরে আড্ডায় ফেরত এলে নিজের টাকা বুঝে নিয়ে বাড়ি।
হাইওয়েতে এই অভিনব পরিকল্পনায় ডাকাতি বেশ কিছুদিন ধরেই সংবাদপত্রগুলোর প্রথম পাতায় জায়গা করে নিয়েছে। সেই সঙ্গে পুলিশের অপারগতাও প্রকট হচ্ছে সমানে! মধ্যরাতের নির্জন কোনো রাস্তায় পড়ে থাকা নগ্ন নারীটিকে দেখে কৌতূহল বা সহমর্মিতা দেখাতে গেলেই অমনি সর্বস্বান্ত, কখনও নিহতও।
করবী এতোশত মাথায় রাখেনি। সে জানে তার পেট আর মামাবাড়িতে রেখে আসা ছেলের জন্য তার এই ই রাস্তা…এইটুকুই!
একবারই খালি চোখ বুঁজে ই একটা চেনা কচি গলায় ‘মা আআআ’, ডাক শুনে ছিল। মামা ভাগনেকে নিয়ে আসছিলো বরাকর থেকে বর্ধমান, ট্রেন অবরোধ হওয়ায় অগত্যা ধানবাদ ফিরতি বাসে, পথেই ডাকাত।
পাগলাগারদে করবী সবসময় ঝিম ধরে বসে থাকলেও, কাপড় পরালেই রণমূর্তি। সেটাকে প্রচণ্ড আক্রোশে ছিঁড়ে কুটি কুটি করে তবে স্বস্তি, যতোদিন বেঁচে ছিল! আর কোনোদিন একবারও আলোতে আসতে চায়নি, একবারও না!