আমি তাকে কোনো সান্ত্বনা দিতে পারি না। উপযুক্ত শব্দই জোটেনা আমার। ভয় হয় পাছে আমার অনুপযুক্ত অপ্রাসঙ্গিক শব্দে তার গভীর অনুভূতি খেলো হয়ে পড়ে!
কিন্তু তবুও অনেক সময় আমি ভীষণভাবে কর্তব্যতাড়িত হয়ে তার কষ্ট, তার অনুভূতির তীব্রতা অনুযায়ী তাকে দুয়েকটি যথপোযুক্ত সান্ত্বনা বাক্য বলার লোভ সামলাতে পারি না। আর তা করতে গিয়ে উপযুক্ত শব্দ হাতড়েটাতড়ে এমন কিছু বলে বসি যা আমার নিজের কাছেই খুব ইনসেন্সেটিভ লাগে।
—ঈশশ! কেন, কি দরকার ছিলো—এমন একটি বাক্য বলার! সে নিশ্চয় ভাবছে—হা ঈশ্বর! দেখো! কাকে দিয়েছি রাজার পাঠ!
ভয় হয় আমার। খুব ভয় হয়! আর যদি সে না আসে তার কষ্টগুলো আমার সাথে শেয়ার করতে! কিন্তু আমি ছাড়া তার তো আর কোনো বন্ধু নেই! তবে কি সে একটি যন্ত্রণার দলা হয়ে যাবে? নিমিষে একটা বিষণ্ণ কালোছায়া ছেয়ে ফেলে আমার চোখমুখ ।
কিন্তু আমার ভয়কে ভুল প্রমাণ করে সে আবার আসে! খুব আশ্বস্ত বোধ করি আমি তখন। এইতো সেদিন এসে বলছিলো—দেখো দেখো কিভাবে মানুষগুলো মরে পড়ে আছে! পোকামাকড়ের মতো চাপা পড়ছে চাকার তলায়..না খেয়ে না দেয়ে হাজার হাজার মাইল..
খুব অস্থির লাগছে জানো, জানো খুব অস্থির লাগছে! বলে সে চুপ করে যায়।
তার কথাগুলো শোনার পর কিছুক্ষণ চুপ থেকে শুধু বলি— হু। আর সেটা আমার নিজের কানেই এতোটা উদাসীন শোনালো যে আমার মনে হলো যে সে নিশ্চয় ই ভাবছে—দেখো! কেমন উটের মতো বালিতে মুখ গুঁজে থাকে!
আমি আবার ভয় পেতে থাকলাম!