দেশ স্বাধীনের পরও সাধনের দিদিমা অনেকদিন বেঁচে ছিলেন। ধুন্দি বলে দূর থেকে ঠিসি কাটলেও কাছে এসে জিজ্ঞেস করতাম- দিদিমা অরুণ কোথায়? অরুণ বাইরে গেছে। অরুণকে ধুলদিয়ার পুলে নিয়ে যাওয়ার পর ফিরে আসেনি। ওখান থেকে কেউ ফেরেনি। সাধন ফিরেছে। সাধনের দাদুও ফেরেনি।
সাধনের ফিরে আসাটা অবাস্তব গপ্পো। আমরা জিজ্ঞেস করলে এড়িয়ে যেতো, কোনদিন গল্পচ্ছলেও বলেনি সেদিন কী ঘটেছিল। সেদিন যা ঘটেছিল গোইয়ার পেইন্টিং মতে, হাত বাঁধা যুবকদের সারি করা লাইনে সারিবদ্ধ জওয়ানেরা গুলি করছে। কেউ মৃত্যু ভয়ে নীল, কেউ মৃত্যুকে তুড়ি মেরে বুক চিতিয়ে গুলিকে আলিঙ্গন করছে। এই হতে পারে ধুলদিয়ার ফায়ারিং স্কোয়াড।
সাধনের দিদিমা সিঁদূর পরতেন। জিজ্ঞেস করলে বলতেন- ওরা বাইরে গেছে, আসবে। একাত্তরের ২০শে এপ্রিল থেকে যা সব ঘটেছিল সবই দুর্ঘটনা, এর শিকার যারা তারা কেউ কেউ বেঁচে আছে। তাদের কাছে ইতিহাস স্তব্ধ, বোঝার মতো বিস্মৃত পাতা। হঠাৎ স্বাধীনতার স্বাদ পেয়ে আমাদের বোধও বুঝতে চায়নি দ্রুত ঘটে যাওয়া দিনপঞ্জির ইতিবৃত্ত। আক্রান্তদের ভাঙ্গা মন শান্ত হয়ে এলে নয়া বাস্তবতা তাদের দাঁড় করিয়ে দিলো টিকে থাকার লড়াইয়ে।
হরলাল পোদ্দার স্বর্ণশিল্পী ছিলেন। তার নাতি স্বর্ণের কারুকাজ শিখে বাপতিব্যবসা করবে এই প্রচলনই স্বাভাবিক। সাধন পিতৃব্যবসায় ফিরে যায়নি। লুটপাটে তাদের পুঁজিপাট্টা সব ভেস্তে গেলে বাঁচার তাগিদ থেকে সে হার্ডওয়্যার দোকানীর যোগানদারিতে লেগে গেলো। ন’টা-দশটা ডিউটি শেষে বাড়ি ফেরা। ফের ন’টা-দশটা। তার বাস্তব থেকে আমাদেরকে মেলানো যায় না। স্বাধীনতার ৩৬ বছর পরও যোগানদারি করে দিব্যি বেঁচে আছে সে। যার আত্মা ধুলদিয়ায় সমাধিস্থ হতে চায়নি, সে মরবে কেন?
সাধনের বেঁচে ওঠা স্বাধীন মুখ তবু বিষণ্ণ, এখনব্দি হাসিবিহীন। তার ব্যস্ততা থেকে এর কারণ উদ্ধার করতে পারিনি। তবুও নতুন যুগের ছেলেরা আমাদের পেছনে লেগে রয়েছে। সত্তরের আগে যাদের জন্ম তারা অন্তত: স্বাধীনতার মানেকে বাস্তবের কষ্টিপাথরে যাচাই করবে। সাধনের মুখ যেন কষ্টিপাথর, বাকহীন। কোন কথাই বলতে রাজি নয়। প্রতি ২৬শে মার্চ তরুণদের মধ্যে কেউ জেঁকে ধরে এবার কোন মুক্তিযোদ্ধাকে চাই, যুদ্ধের অভিজ্ঞতা ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের ভেতরে গড়িয়ে আসা কোন ঘটনার সাক্ষী যেন নিজ মুখে কেচ্ছাটা গায়। সাক্ষাৎ সাক্ষ্য দেবার জন্য সাধনকে দরকার। সে দেবে না। এড়িয়ে যায়। বলে, ভয় করে। কিসের ভয়? যারা ধরে নিয়েছে তাদের? তারা তো পশ্চিমা পাক আর্মি, ফিরে আসবে না। তারা না এলেও রাজাকার, আলবদর চারপাশে থেকে গেছে। আমাকে ধরতে আসা মুখবাঁধা দু’জনকে এখনো দেখি, ওদেরকে যমে ধরেছে। ওরা স্বপ্নেও শাসিয়ে যায়। ভাই প্লিজ, আমাকে ওসব ঝামেলায় ফেলো না, আমি বলতে পারবো না। সাধন আমার বন্ধু। বন্ধুকে বলে কয়ে বুঝিয়ে বলি, আমাদের শোনা চাই-ই। তুমি বেঁচে আছো, আগামীর মানুষেরা জানুক তুমি কেমন করে ফিরে এলে!
মুখবাঁধা রাজাকার দু’জন বাজার থেকে ফলো করে পিছু নিয়েছিল। পাক-মিলিশিয়ারা প্যান্ট খুলে শিশ্ন দেখছে। আমার আছোলা লিঙ্গ দেখেও আমাদেরকে ছেড়ে দিয়েছিল, ওই পরখে তুমিও ছিলে। হ্যাঁ হ্যাঁ। তারপরই তারা বাসায় হানা দেয়। দাদু, দিদিমা, বড়দা সবাইকে হাত বেঁধে তাদের পিছু যেতে বললো। নীলু বাবুর বাসা পর্যন্ত গেলে ওরা দিদিমাকে ছেড়ে দিল। আমরা অর্ধমৃতের মতো হাঁটছি, রঙমহল নাগাদ হাঁটার পর দাঁড়ানো আর্মি জীপে আমাদের তোলা হলো। শত্রু শনাক্তকারী রাজাকারদের হাসিমুখ, পাকসেনাদের উল্লাস আমাদের মৃতবৎ বসে থাকা গাড়ীর স্টার্ট নেয়ার আওয়াজ কিছুই কানে ঢুকছে না। পাশে বসে থাকা অন্য বন্দিদের দিকে চেয়ে আছি। ওরা মাছের চোখে আমাদের দেখছে। ওদের শরীরের ওমে বুঝতে পারছি এখনও বেঁচে আছি।
পাকবাহিনীর ক্যাম্পে নামার পর রাইফেলের পাছার বাড়ি, কুঁদোর গুতা, বুটের লাথির পাশবিক বিকার, ঘৃণার থুথুতে রক্তজলের ঝালরতোলা মুখগুলো পরস্পরকে দেখছে। আগে ধরে আনা মানুষগুলোর শরীরী জখম থেকে তখনো রক্ত ঝরছে। কারো খোঁচা খোঁচা দাঁড়িতে রক্তের ফোঁটা ঝুলে আছে। ঝুলে থাকা চোয়ালের ফাঁকে ফরসা দাঁতভাঙ্গা মাড়ি দেখে আঁতকে ওঠা প্রায় বুঁজে আসা আমার ছোট চোখ আরো ছোট হয়ে প্রায় নিভে গেছে। ভীতুর মৃত্যুভয় খোলা সন্ত্রাসে সন্ত্রস্ত সময়, এখানে মানবতা চিররুগ্ন, অনাথ। সন্ত্রস্ত মানুষদের বিলাপ জঙ্গলে বরফ চোখ এঁকে অপরকে চাউর করে নিচ্ছে।
আমার কি-ই বয়স, বুড়া দাদুর চোখে জল নেই। পিপাসার জলও কেউ রেখে যায়নি। শুঁকা নোন্তা ঠোঁট চাটতে চাটতে বড়দা পরিচিতদের সাথে কথা বলছে, আমাদেরকে ধুলদিয়ার ব্রিজে নেয়া হবে। আমাদের জন্য অপেক্ষমান বরাদ্দ পিটুনীর খবর শুনে অরুণদা জড়িয়ে ধরলো। আমার বুকের ধুকপুক শব্দে পৈশাচিক পিটুনীর আগাম আয়োজনের মধ্যে পরস্পর বিদায় চেয়ে নিচ্ছি। যেন কোন দিন দেখা হবে না এমন প্রতিশ্রুতিহীন মূক দৃষ্টির গড়ানো ফোঁটার ভেতর শেষযাত্রার প্রস্তুতিও নিতে পারলাম না। টেনেহিঁচড়ে পাশের খোলা রুমে লাঠি, বাটের গুঁতোয় ঠোঁটের কষগড়ানো রক্ত-লালায় একাকার আমাদের অবস্থাগুলো বল্গাহীন গালির তোড়ে মড়ার স্বাদ নেয়ার তীব্র আকর্ষণে আত্মার হ্রেষায় হা হা করা হৃৎপিন্ডের দুখি ঢিপঢিপ শুধু তখনো বেঁচে আছে।
অন্ধের লাঠি ধরার মতো চোখবাঁধা মানুষের মিছিল হাঁটছে। স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা জঙ্গি মিলিশিয়া, রাজাকারদের লাথি-গুঁতোয় পা ফসকে হামাগুড়ি খেয়ে কোনরকম মাল রাখার পাটাতনে আমরা সবাই বসে আছি। ইঞ্জিনের জবরজং শব্দনাদ গোঙানির হাহাকারে কিছু সময় কেটেছে কেবল, আবার নামার ঠেলা বুঝে ব্রিজের পাড়ে বাটের গুঁতো মতো দাঁড়িয়ে আছি। মন টানছে না। পাড়ে সারবাঁধা রাইফেলের গর্জে ওঠা আর্তনাদ আমাদের নিথর শরীরকে ফেলে দেবে স্রোতস্বি ধারায়; জীবন নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়বো মৃত্যুর বোরকা পড়ে। এই বোধ তাড়িয়ে ফিরছে, নিদেন বাঁচার চেষ্টাকে ধরে আনা কিংবা ভাবতে যাবো এই দুঃসাহস কার? এমন সাহসী ভীরু জীবিতদের লাইনে কেউ আছে বলে মনে হলো না। চুপি চুপি বড়দাকে বলছি- দাদা লাফ দে, পানিতে পড়ে গেলে পড়ে দেখা যাবে। দাদার মুখে রা নেই, তার চোখ মুখ কী করে দেখবো। মনের চোখে বুঝছি, আত্মার চিৎকারে যতটুকু জোরে বললে শুনবে সেরকম একটা চেষ্টা আমার মধ্যে জেগে উঠলো। দাদাকে আবার ধাক্কা ইশারায় বোঝাতে চাইলেও সে আমার মত বাঁচার পন্থি পলাতকের ভ‚মিকায় যেতে চাইলো না। শরীরে শরীর লেগে থাকা উষ্ণ চিৎকারে, ধাক্কায় আবার বোঝাতে গিয়ে শুনছি গুলির শব্দ, ভীত চিৎকারে, আল্লাহ্, ভগবান শব্দের দুমড়ানো আর্তনাদ। আত্মার ভেতর থেকে টেনে আনা কনুইয়ের গুঁতোয় বড়দাকে শেষ ধাক্কা দিয়ে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়লাম। একডুবে নদীর তলের কাদামাটির বুক ছুঁয়ে এগুচ্ছি। গুলির গতি ফেড়ে গিয়ে জলের তলে শব্দের ঝমকানির ভেতর যতটুকু যাওয়া যায়। দম ফুরিয়ে আসছে। তবু বাতাসের ঊর্ধ্বচাপ ঠেলে বুকের ভেতর খাঁচার আশ্চর্য আকুতি আমাকে টেনে চলছে। এবার বাধ্য হয়ে উপরে উঠছি। উপরিতলে নাকের ফুটো আজলা ভরে দম নিয়ে ফের এক ডুবে জলের অতলে ডুবে ডুবে ওপাড়ের দিকে চলেছি। একবার শ্বাস নেয়ার ফাঁকে কচুরিপানার চুল কামড়ে ধরলাম। কচুরির ভাসানো পাতার ফাঁক দিয়ে ওপাড়ের এলোপাতারি গুলির কসরত করা জওয়ানদের গালিগালাজের আওয়াজ কানে আসছে। নিরাপদ গন্তব্যে যাওয়ার সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য মনের শেষ সাহসকে জমা করছি। সাঁতরে আর কতক্ষণ? বুকের হাঁপড় পড়তে চাচ্ছে না। এখনি কোথাও না জিরোলে এমনিতেই আত্মা তার খাঁচা ছেড়ে চলে যাবে। মুহূর্তে মনে হলো ওপাড়ের বাঁশের গুঁড়িগুলোর নাগালে পৌঁছে গেলে আজগার আড়ালে দম নেয়া যেতো আরো কিছুক্ষণ। জীবিতদের পৃথিবীতে থেকে গেলে মন্দ হতো না। মনে মনে মরে গেছি না বেঁচে আছি মুমুর্ষু মাছের মত পাখনা লেজ নেড়ে পানির স্রোতে ঢুকছি কেবল। এগুতে পারছি না। শেষ পর্যন্ত মৃতপ্রায় পা উজানের মাটির স্পর্শ পেলো। মাথা ঢাকা কচুরির পাতার ভেতর শ্বাস নিচ্ছি। বুকে ভরার জায়গাও নেই আবার প্রশ্বাসে ক্লান্ত হয়ে ডুবে যাই। ধীরে স্থির হলাম। বেঁচে আছি। মরার মতো ভেসে উঠছি দেখে নিজেকে ঠেসে বাঁশের গুঁড়ির আড়ালে রাখার অনন্ত চেষ্টা করে যাচ্ছি। হন্তারক জওয়ানদের চিৎকার, গাড়ীর স্টার্ট নেয়ার শব্দের সাথে ধুলদিয়ার কুকুরদের মরা কান্না মিলেমিশে হট্টগোল-হল্লাসব এতক্ষণে শান্ত হয়েছে।
নদীর এই পাড়টা আমার পরিচিত। দু’গ্রাম পরেই দাদার ভিটেবাড়ি। ছোটবেলার স্মৃতিঘেরা ধুলদিয়া পাড়ের ভাললাগা মুহূর্তদের মনে পড়ছে। এত ঘোরলাগা মৃত্যুর উৎসবের ভেতর স্মৃতিরা ঠাঁই নিচ্ছে বলে ছেড়ে দিচ্ছি না। মুহূর্তদের ভাবছি। ভাবছি এরপর কী হবে, দাদু বড়দা কি মরণের ওপাড়ে? রক্ত লাল করা পানির সাথে ভেসে গেছে, না আহত মানুষগুলো জলের ভেতর শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা পড়লো! মৃতদের রক্তরসে ভরা শরীরের ভেজা আস্তরণকে নিংড়ে নিংড়ে ফেলে দিচ্ছি। শেষ রাতের চাঁদ হেলে আছে। দিগন্তের অন্ধকারে গাছে সারগুলোর মাথায় একচোখা নীরব তাপে আমার গমনাগমন দেখছে। ভয় পুরোপুরি শরীরী খোলস ছেড়ে যেতে চাচ্ছে না। কৈশোরের মজা গাঙের পাড় ধরে হাঁটছি। পাশের পুকুরে চাঁদের ঝিলিমিলি ঢেউকাটা আলোয় কালো শরীরের রক্তভেজা স্পর্শকে দলাইমলাই করে কিছু একটা ছুঁড়ে ফেলছি। অজস্র মৃত্যুর প্রতীকী হিস্যা তাড়া করছে, আত্মায়ও ঢুকে গেছে কেউ কেউ। কাদামাটি ঘসে ঘসে শরীরে লেগে থাকা ধুলদিয়ার পানি তোলে ফেলে নিজেকে উদ্ধার করছি। যেন বেঁচে আছি নতুন ‘সাধন’। আহত-অসমাপ্ত-পর্যুদস্ত। রক্তরসের স্নানে ভেজা অনুভূতিকে উগড়ে ফেলে দিলেও মৃত ভাই, দাদু, অজানা মানুষদের মৃতগন্ধ সরাতে পারছি না। অনেকক্ষণ ভেজা কাপড়ে থাকতে গেলে শরীরে যেমন কাঁপন ধরা খরখরে ভাঁজ পড়ে, তেমনি শরীর চলার মত বেঁচে আছে কি না তার মত করে ভাবতে ভাবতে হাঁটি।
ভোরের রক্তরাগ পুব-আকাশের উপর ঢেলে রাঙা হয়ে উঠছে। খালি গলার আযানের সুর রাতকে তাড়াতে তাড়াতে আলোয় এসে ঠেকেছে। সামনের বসতবাটি থেকে বয়স্ক ক’জন বের হলে ওদের থেকে আড়ালে যাওয়ার চেষ্টা করেও ওদের সামনেই দাঁড়িয়ে গেলাম। ধুলদিয়ার রক্তজলকরা কাহিনীর আর কি বলার থাকে! ওরা আশ্বস্ত করলো। আল্লাহ জমিনে বিধর্মীর জন্যেও আশারা টিকে আছে। মুসল্লিদের একজন বাড়ি থেকে শুকনো লুঙ্গি দিয়ে থেকে যেতে বললো। আমার সায় নেই। হাঁটবো বলে বিদায় নিয়ে কোচড় ভেঙে মুড়ি চিবাই, হাঁটি, কোথায় যাবো? কার কাছে? দাদু নেই, দাদুর ভিটায় কী হবে?
দিনে অনেকের সাথে দেখা হয়। আদাব সালামের শেষে ধুলদিয়ার কাহিনী কেউ শোনে, কেউ কানকথার ভয়ে এড়িয়ে যায়। নিজেকে পরশপাথর মনে হয়। আমাকে কোথায় রাখবো। দাদু বড়দা বেঁচে নেই, ওদের বাঁচাতে পারলাম না। আমিই বেঁচে আছি, তাও মানুষ মরাদের দলে ঠেলে দিয়ে পালাতে চায়। ভাব নিয়ে কথা বলে। কেউবা ভূত-প্রেতাত্মা কি না এই ভয়ে কথা সংক্ষিপ্তে সারে। নিজেকে তুচ্ছ ভাবতে ভাবতে এমন স্থানু আছি, ভাবতে পারি না। অপরাধবোধ মনের সবটুকুর দখল নিয়েছে। আমার জন্যেই দাদু বড়দারা ধরা পড়লো, আমাকে বাঁচিয়ে রেখে ওদের নিয়ে গেলে ভগবান! আমার দোষে বেচারা দাদু-বড়দা, আহা কি হয়ে গেলো- সব খালি খালি লাগছে! কষ্ট ঝেপে আসছে। চোখে, মাথায় বুক ভার করা ব্যথারা জেগে উঠছে বারবার। শোকের তাবে ভেতর খালি করা চিৎকারে কান্নারা ধেয়ে আসছে- আমিই খুনি, ওদের মেরে ফেলেছি।
সাধন ক্ষিপ্ত প্রস্তর যেন। বোবা-নাঙ্গা মুখে কথা রোচে না। নীরব চাহনি দেখে চুপসে যাই। তাকে কথা বলানো দরকার। ও বলে- তুমি তো শুনলে, বলো গে, আমার ওসব ভাল লাগে না। প্লিজ, পথ ছাড়ো।